উত্তরপ্রদেশের কাশী আর উত্তরাখণ্ডের গুপ্তকাশী সনাতনীদের কাছে এই দুই স্থানের মাহাত্ম্যই ব্যাপক। মহাভারতে গুপ্তকাশীর উল্লেখ আছে। মহাদেবের দর্শন লাভের উদ্দেশ্যে পাণ্ডবরা যখন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড চষে বেড়াচ্ছে, কখন এই গুপ্তকাশীতেই আত্মগোপন করেছিলেন মহাদেব।
কৈলাসের প্রবেশদ্বার
গুপ্তকাশী হল কৈলাসের প্রবেশদ্বার। এখানকার প্রধান আকর্ষণ বিশ্বনাথ মন্দির এবং অর্ধনারীশ্বর মন্দির। শহরের আরেকটি আকর্ষণ হল মণিকর্ণিকা কুণ্ড। গঙ্গা ও যমুনা নদীর স্রোত এখানে মিলিত হয়েছে। সবুজে ঘেরা অপূর্ব সুন্দর দেওরিয়া তাল এখানকার আরেক আকর্ষণ। কেদারনাথ ভ্রমণকারীরা গুপ্তকাশীতে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য থামেন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরিসীম
কেদারনাথ থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গুপ্তকাশীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব। সমুদ্রপৃষ্ঠপৃ থেকে ১৩১৯ মিটার উঁচুতে অবস্থিত, গুপ্তকাশীর প্রাকৃতি সৌন্দর্যও অপরিসীম। চৌখাম্বা পর্বতর্বমালার মায়াবী তুষারাচ্ছাদিত চূড়া দেখে শরীরে রোমাঞ্চ জাগে। এখানকার আবহাওয়া বেশ মনোরম। চারদিকে শুধু সবুজ অরণ্য। শহরের গা ঘেঁষে বয়ে গেছে অলকানন্দা নদী।মন্দাকিনী নদীর সবুজ উপত্যকায় গ্রীষ্মের শুরুতে প্রচুর ম্যাগনোলিয়া ফুল ফোটে। তার সুগন্ধে বাতাস মাতোয়ারা হয়ে যায়।
সর্বধর্ম তীর্থক্ষেত্র
শুধু হিন্দুদের জন্যই নয়, গুপ্তকাশী বৌদ্ধ এবং জৈনদেরও একটি তীর্থক্ষেত্রে। দেবী কুশমাণ্ডার মন্দিরে হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের লোকেরা পুজো দেন। মন্দিরটি দশম শতকে নির্মাণ করেন এই অঞ্চলের শাসক রাজা জয় চাঁদ। এখান থেকে দেও টিব্বা, নন্দা দেবী, ও পাঁচচুলির মতো হিমালয়ের চূড়াগুলির চমৎকার দৃশ্য চোখে পড়ে। স্মার্টসিটি ঘোষিত হওয়ার পর গুপ্তকাশীতে পর্যটকদের আনাগোনা আরও বেড়েছে।
ট্রেকিং-এর জন্য আদর্শ
গুপ্তকাশী ঘোরার পরিকল্পনা করলে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে যান। ট্রেকারদের জন্য এই স্থান আদর্শ। গুপ্তকাশী থেকে ট্রেক করে হেমকুণ্ড সাহেব এবং ফুলের উপত্যকায় পৌঁছোনো দারুণ অভিজ্ঞতা। এই উপত্যকা এপ্রিল থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। তবে জুলাইয়ের শেষ থেকে অগাস্ট পর্যন্ত বর্ষার কারণে পথ বন্ধ থাকে। এখান থেকে পায়ে হেঁটে তুঙ্গনাথ মন্দিরেও পৌঁছোনো যায়।
কী ভাবে গুপ্তকাশী পৌঁছবেন?
- গুপ্তকাশীর নিকটতম বিমানবন্দরটি হল দেরাদুনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দর। শহর থেকে বিমানবন্দরের দূরত্ব ১৯৮ কিলোমিটার। বিমানবন্দর থেকে বাস বা ট্যাক্সিতে গুপ্তকাশী পৌঁছোনো যায়।
- নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল ঋষিকেশ রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনটি গুপ্তকাশী থেকে প্রায় ১৮১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখান থেকে বাস বা ট্যাক্সিতে পৌঁছতো পারেন।
- সড়কপথে গুপ্তকাশী পৌঁছানোর কিন্তু মজাই আলাদা। দুই ধারের অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে পাহাড়ি গ্রামের মধ্য দিয়ে যাঁয়ার কোনও তুলনাই হয় না।
এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP 2024-07-03T13:00:19Z