SSC RECRUITMENT SCAM: পরশু মাধ্যমিকের ফল, তারপর ভর্তি ... কিন্তু কী ভাবে?

এই সময়: আদালতের রায়ে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলে স্কুলে পঠনপাঠন থেকে ভোটের কাজ ঘিরে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ তো আছেই। এরই মধ্যে নতুন চিন্তা তৈরি হলো মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলে ভর্তি ঘিরে।

কলকাতা হাইকোর্টের ওই রায়ে সোমবার, প্রথম দিনের শুনানিতে অন্তত স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। এ দিকে, পরশু, বৃহস্পতিবার বেরোচ্ছে এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সওয়া ৯ লক্ষ। বৃহস্পতিবার ফল বেরোনোর পর শুক্রবারই একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হিসেব অনুযায়ী, আদালতে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোটাই বাতিল হওয়ার ফলে বর্তমানে মাধ্যমিক এবং এইচএস স্তরের ১২ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি নেই। সঙ্গে আছেন সাড়ে আট হাজার শিক্ষাকর্মী।

তা হলে মাধ্যমিকের মতো এত বড় পরীক্ষার ফলপ্রকাশের কাজ হবে কী করে, স্কুলগুলির পাশাপাশি সে প্রশ্ন ভাবাচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকেও। কী ভাবেই বা ৬,২৩২টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ইলেভেনে পড়ুয়াদের ভর্তি করা হবে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। রাজ্য স্কুলশিক্ষা দপ্তরের হিসেবে (‘ইন্টিগ্রেটেড স্যালারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ অনুযায়ী) এই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে এখন শিক্ষক-শিক্ষিকা ২২ হাজার ২৬৬ জন। আদালতে দেওয়া স্কুল সার্ভিস কমিশনের হলফনামা জানাচ্ছে, ২০১৬ সালে শুধু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৫৯৬ জন। প্যানেলের বাকি শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল মাধ্যমিক স্তরে।

কিন্তু গত সপ্তাহে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে ওই সাড়ে পাঁচ হাজার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, আপাতত তাঁরা চাকরিহারাই। এঁরা এখন স্কুলে যাবেন কি না, সেটা পুরোপুরি নির্ভর করছে নিয়োগকারী সংস্থা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উপরে। সোমবার পর্ষদ-সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘এত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর স্কুলে যাওয়া বা না-যাওয়া, স্কুল পরিচালনা থেকে পঠনপাঠন, সবই পর্ষদের দেখার কথা। এই পরিস্থিতিতে স্কুলগুলো কী ভাবে চলবে, সে ব্যাপারটা আমরা নজরে রাখছি।’ কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে যাবেনই, এমন নিশ্চয়তা পর্ষদও এখনই দিতে পারছে না।

এদিকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশে একাদশ-দ্বাদশে এ বারই সেমেস্টার পদ্ধতি চালু হচ্ছে। দুই শ্রেণি মিলিয়ে চারটি পরীক্ষা। ফলে এই পদ্ধতিতে চাপ আরও বাড়বে। ভরসা বলতে মাধ্যমিক স্তরের এক লক্ষের কিছু বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা। এমনিতেই মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে একসঙ্গে ১৭ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে আদালতের রায়ে। যার জেরে রাজ্যের বেশ কিছু স্কুল কার্যত স্থায়ী শিক্ষক-শূন্য হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদা, উত্তর দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদের অনেক স্কুলে এখন ভরসা ক্যাজ়ুয়াল ও প্যারাটিচাররা। বহু স্কুলে পড়ুয়ার অনুপাতে স্থায়ী শিক্ষক অনেকটা কম।

এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুয়েমারি হেরম্বগোপালপুর এসএম বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণব দলুই বলেন, ‘আমি-সহ স্কুলে ছ’জন পূর্ণ সময়ের শিক্ষক ছিলাম। আদালতের রায়ে সবারই চাকরি গিয়েছে। আমরা না গেলে তো বৃহস্পতিবার মাধ্যমিকের ফল সংগ্রহ ও বণ্টনই হবে না। তাই স্কুলে যেতেই হবে। যদিও পর্ষদ এখনও এ নিয়ে কোনও নোটিস দেয়নি।’ তাঁর মতে, রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ না মিললে, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি ও পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

মালদার মোথাবাড়ি পঞ্চানন্দপুর সুকিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল জানান, তাঁদের স্কুলে ৭ শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। গ্রুপ ডি-র তিনটি পোস্টে একজনই শিক্ষাকর্মী ছিলেন, তাঁরও চাকরি গিয়েছে। এখন রেজ়াল্ট ও ভর্তি পর্ব চালানো নিয়ে মাথায় হাত মোস্তাফার।

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-04-30T02:52:41Z dg43tfdfdgfd