কাশ্মীরে AFSPA প্রত্যাহার-সেনা সরানো-POK পুনরুদ্ধার? পুরো প্ল্যান জানালেন শাহ

অনুচ্ছেদ ৩৭০ আগেই বিলোপ হয়েছে। এবার জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আরও একটি বড় পরিকল্পনার পথে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) জানালেন, জম্মু-কাশ্মীর থেকে সশস্ত্র বল অধিনিয়ম বা AFSPA ফেরানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কাশ্মীরি সমাচার চ্যানেলে একটি সাক্ষাত্‍কারে শাহ জানান, কেন্দ্র শাসিত প্রদেশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা শুধুমাত্র পুলিশের উপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। যার নির্যাস, কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে জম্মু-কাশ্মীরে আর সেনা ভারী বুটের শব্দ শোনা যাবে না। 

অমিত শাহের কথায়, 'আমাদের পরিকল্পনা হল, সেনা প্রত্যাহার করে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা শুধুমাত্র পুলিশের উপর দায়িত্ব দেওয়া। অতীতে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের উপর ভরসা করা যেত না। কিন্তু আজ সেই পুলিশ কোনও অপারেশনের নেতৃত্ব দিচ্ছে।' এরপরেই বিতর্কিত  AFSPA নিয়ে প্রশ্নে শাহ বলেন, 'আমরা  AFSPA সরানোর বিষয়ে ভাববো। কাশ্মীরের যুবসম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলব। ওদের সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করব না, কারণ সংগঠনগুলির শিকড় পাকিস্তানে।'

PoK পুনরুদ্ধার করা ভারতের লক্ষ্য

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, বিজেপি ও পুরো সংসদ এটা বিশ্বাস করে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর কথায়, 'মুসলিম ভাইও ভারতীয় এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বসবাসকারী হিন্দু ভাইরাও ভারতীয়। পাকিস্তান যে জমি অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছে, তা ফেরত পাওয়া প্রতিটি ভারতীয়, প্রতিটি কাশ্মীরির লক্ষ্য। আজ পাকিস্তান খাদ্যাভাব ও দারিদ্র্যে সঙ্কটে, পাকিস্তানের মানুষও কাশ্মীরকে স্বর্গের মতোই দেখেন। আমি বলছি, যদি কোনও ব্যক্তি কাশ্মীরকে বাঁচাতে পারেন, তিনি হলেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদী।'

কাশ্মীর নিয়ে আরও পরিকল্পনার

জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তিরা AFSPA প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। শাহ বলেন,সেপ্টেম্বরের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি এবং তা পূরণ করা হবে। তবে এই গণতন্ত্র শুধু তিনটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না এবং হবে জনগণের গণতন্ত্র। এই সুবিধাগুলি তৃণমূল স্তরে পৌঁছানোর জন্য কেন্দ্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কোথায় কোথায় AFSPA সরানো হয়েছে

মোদী সরকারের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির কারণে ২০১৫ সালে ত্রিপুরা থেকে এবং ২০১৮ সালে মেঘালয় থেকে AFSPA-এর অধীনে অস্থির এলাকার বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণরূপে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯০ সাল থেকে সমগ্র অসমে ডিস্টার্বড এরিয়া নোটিফিকেশন কার্যকর ছিল। ১ এপ্রিল, ২০২২ থেকে, অসমের ৯টি জেলা এবং একটি জেলার একটি মহকুমা ব্যতীত সমগ্র আসাম রাজ্য থেকে AFSPA-এর অধীনে অশান্ত এলাকাগুলি সরানো হয়েছিল। ১ এপ্রিল, ২০২৩ থেকে, অশান্ত এলাকায় আরও হ্রাস শুধুমাত্র ৪ জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল।

আইন কবে প্রণীত হয়?

AFSPA হল একটি আইন যা 'অশান্ত এলাকায়' প্রয়োগ করা হয়। AFSPA অশান্ত এলাকায় কর্মরত সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের "জনশৃঙ্খলা বজায় রাখার" জন্য প্রয়োজনে অনুসন্ধান, গ্রেপ্তার এবং গুলি চালানোর ক্ষমতা দেয়৷ এই আইনটি ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৮ সালে প্রণীত হয়েছিল। এটি প্রথম উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল। ৯০-এর দশকে জম্মু ও কাশ্মীরে যখন সন্ত্রাস বেড়ে যায়, তখন এখানেও এই আইন কার্যকর করা হয়েছিল।

2024-03-27T03:56:45Z dg43tfdfdgfd