শুধু 'চাকরি বিক্রি'-ই নয়, 'বদলি বিক্রি'-ও করতেন TMC নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়!

কলকাতা: শুধু চাকরি বিক্রির টাকাই নয়, সরকারি কর্মচারীদের বাড়ির কাছে বদলির জন্যেও সুপারিশ করতেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য়। গত ২০ জানুয়ারিই এই তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। সেই সময় তাঁর বাড়ি থেকে চাকরিপ্রার্থীদের নাম, অ্যাডমিট কার্ড, সুপারিশ পত্র পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, সূত্রের খবর, তল্লাশি চলাকালীন শুধুমাত্র, এসএসসি, টেট-এর প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড, সুপারিশ পত্রই নয়, মিলেছিল সরকারি কর্মীদের বদলির সুপারিশ পত্রও। এর থেকে ইডি আধিকারিকরা ধারণা করছেন, শুধুমাত্র চাকরির বিনিময়ে টাকাই নয়, সরকারি কর্মচারীদের তাঁদের পছন্দের জায়গায় বদলির বিনিময়েও টাকা নিতেন শান্তনু।

সরকারি কর্মচারীদের কাছে বদলি একটা বড় ইস্যু। প্রত্যেকেই তাঁদের নিজেদের বাড়ির কাছাকাছি পোস্টিং পেতে চান। বদলির একটা নির্দিষ্ট সরকারি নিয়মও রয়েছে। নিয়ম মেনে, নির্দিষ্ট সময়ের পরেই, কারণ জানিয়ে বদলির আবেদন করা যায়। কিন্তু, এই বদলি করানোর পিছনেও যে টাকার লেনদেনের রমরমা ব্যবসা থাকতে পারে তা ভাবতে পারেননি গোয়েন্দারা। ইডি-র আধিকারিকরা মনে করছেন, টাকার বিনিময়ে চাকরির পাশাপাশি, টাকার বিনিময়ে বদলিও অন্যতম 'ব্যবসা' ছিল হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল শান্তনুর।

আরও পড়ুন: দুবাই-ব্যাঙ্কক-মলদ্বীপ! অভিনেতা বনি সেনগুপ্তর ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণেও এবার নজর ED-র

শুধু তাই নয়, ইডি-র কাছে শান্তনু নাকি স্বীকার করেছেন, দলীয় কর্মী অর্থাৎ, তৃণমূল সদস্যেরাও চাকরি চেয়ে হাজির হতেন তাঁর কাছে। তাঁদের হয়ে সুপারিশ মানিক ভট্টাচার্যের মতো উপরমহলের লোকদের কাছে পৌঁছে দিতেন এই শান্তনুই।

তবে শুধুই মানিক ভট্টাচার্য, নাকি নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও বড় কোনও রাঘব বোয়াল রয়েছে, তা জানতে তদন্ত জারি থাকবে বলে ইডি-র তরফে জাননো হয়েছে।

আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করতে একাধিক শেল কোম্পানি! নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার তলব শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে

ইতিমধ্যেই শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিপুল সম্পত্তির হদিস পেয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নামেও প্রচুর পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। সরকারি চাকরিতে বার্ষিক মাত্র ৬ লক্ষ টাকা বেতন হওয়া সত্ত্বেও শান্তনুর সম্পত্তির মোট মূল্য কোটি কোটি টাকারও উপরে। এছাড়া, এই সমস্ত কালো টাকাকে সাদা করার জন্য একাধিক কোম্পানিও খুলেছিলেন তিনি। তার মধ্যে বেশ কয়েকটির ডিরেক্টর পদে রেখেছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে। জানা গিয়েছে, এমনই একটি সংস্থা ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল। শুরু থেকেই সেই সংস্থার ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছিল প্রিয়াঙ্কাকে। সামনের সপ্তাহে প্রিয়াঙ্কাকে তলব করেছে ইডি।

গত ১০ মার্চ ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে গ্রেফতার করেছে ইডি।

2023-03-12T12:50:22Z dg43tfdfdgfd