ঠিক রাত দশটা, তখনই নয়াদিল্লি স্টেশনে ঘটল ভয়াবহ ঘটনা! মূল কারণ কি সেই ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম?
নয়া দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ভারতীয় রেল। এর পাশাপাশি আহতদেরও ক্ষতিপূরণ দেবে রেল। পদপিষ্টের ঘটনায় গুরুতর আহতদের ২.৫ লক্ষ টাকা করে এবং তুলনায় কম আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু কী করে ঘটল এই ভয়ঙ্কর ঘটনা? জানা গিয়েছে, নয়া দিল্লি স্টেশনের ঢোকার জায়গা থেকে শুরু হয় ভিড়। মাত্র তিন-চারটি চ্যানেল। ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর বসানো গেট দিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা। তারপর ওই ফুট ওভার ব্রিজ। ওখানেই সবাই ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে। সেই ওভার ব্রিজেও কয়েকটি ধাপ। মানে উঠতে ও নামতে হয়। ডিসপ্লে বোর্ডে ট্রেনের নাম ও প্ল্যাটফর্ম দেওয়া হলেই জনসমুদ্রে ঢেউ ওঠে। শনিবার আচমকাই ট্রেনের নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বদলের ঘোষণা হয়। দুই বিপরীত স্রোত মুখোমুখি হয় বলেই এই ঘটনা। নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে ১৬টা প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর জন্য ৩টে ফুট ওভারব্রিজ আছে। একদিকে পাহাড়গঞ্জ (১নং প্ল্যাটফর্ম) অন্যদিকে আজমেরি গেট (১৬ নং) দু’দিক দিয়ে যাত্রীদের ফ্লো আসে। যদি অসংরক্ষিত টিকিট কেটে আসা যাত্রীদের আটকে দেওয়া হত, তাহলে ভিড় হয়ত কিছুটা কম হত বলে মত প্রত্যক্ষদর্শীদের। অসংরক্ষিত টিকিট কেন বিক্রি করা হল এত সংখ্যায়? ট্রেনে ক্যাপাসিটির বাইরে টিকিট দেওয়ার দায়িত্ব কার? ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত ১০ টার দিকে, যাত্রীরা তাদের নিজ নিজ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, যার মধ্যে একটি – প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস। ট্রেনটি ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল, যেখানে হঠাৎ যাত্রীদের ভিড় থেকে প্ল্যাটফর্মে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই চরম পরিণতি। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশমুখী একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। একাধিক ট্রেন পুরনো দিল্লি, নিজামুদ্দিন স্টেশনে ডাইভার্ট করা হয়েছে। বারবার যাত্রীদের জন্য ঘোষণা করা হচ্ছে ট্রেন বাতিলের কথা। নয়াদিল্লির রেল স্টেশনে মৃতদের মধ্যে ১৪ জন মহিলা এবং অন্তত ২ জন শিশু আছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এদিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতের ঘটনায় মৃতদের পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছেন। এই আবহে উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক যুক্তি দিয়েছেন, একজন সিঁড়ি দিয়ে পিছলে পড়ার জেরেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মহাকুম্ভ মেলায় যোগ দিতে শনিবার প্রচুর সংখ্যায় পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছিলেন নয়া দিল্লি রেল স্টেশনে। এর জেরে বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে থিকথিক করছিল ভিড়। শনিবার রাতে তিনটি ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল প্রয়াগরাজের উদ্দেশে। কিন্তু এর মধ্যে দু’টি ট্রেন লেট থাকায় ভিড়ের চাপ আরও বেড়ে যায়। এ নিয়ে রেলের ডিসিপি কেপিএস মালহোত্রা বলেছেন, ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই প্ল্যাটফর্মে প্রচুর লোক ছিল। স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস লেট ছিল। এই ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা প্রচুর যাত্রী ১২, ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল। ভিড় এতটাই বেশি ছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।’
2025-02-16T05:42:00Z