GROWTH-এর ভারতে ভোটের ইস্যু UNEMPLOYMENT

এই সময়: ভোটের ভারতে দেশে বেকারত্ব-সমস্যা নিয়ে ফের সতর্কবার্তা দেওয়া হলো এক আন্তর্জাতিক সমীক্ষায়। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের ওই সার্ভেয় ভারতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান রয়েছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তার আগে এক রিপোর্টে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) আবার জানিয়েছে, ভারতীয় বেকার জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশই যুব-সম্প্রদায়ের।

তাঁদের ভবিষ্যৎ-নির্ধারণে সরকারের চেষ্টায় ফাঁক থেকে গিয়েছে, যা নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের সামনে অন্যতম বড় ইস্যু বলেই রিপোর্টে প্রকাশ। গত ১৯ এপ্রিল দেশে প্রথম দফার ভোট হয়ে গিয়েছে। বাকি দফাগুলি শেষ হয়ে ফল ঘোষণা হবে ৪ জুন। এবং বেকারত্ব নিয়ন্ত্রণই নবনির্বাচিত সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

১৬-২৩ এপ্রিলের মধ্যে ২৬ জন অর্থনীতিবিদের মধ্যে সমীক্ষাটি চালানো হয়। এঁদের মধ্যে ১৫ জনের মতে, নতুন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বেকারত্বই। আটজন অর্থনীতিবিদ গ্রামাঞ্চলের ভোগ-ব্যয়, দু’জন মূল্যবৃদ্ধি এবং একজন দারিদ্রকে চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেছেন।

২০১৪-য় প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীর বার্তা ছিল ‘বিকশিত ভারত’ গড়ার। বিপুল কর্মসংস্থান, দারিদ্র দূরীকরণ, পরিকাঠামো খাতে বিপুল বিনিয়োগের কথাও বলা হয়। তার পাঁচ বছর বাদে ফের ক্ষমতায় আসেন মোদী। তার পর কেটেছে আরও পাঁচ বছর। এ বার, ২০২৪-এর ভোটে ২০৪৭-এর মধ্যে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে প্রচারে নেমেছেন নমো।

দশ বছরের শাসনকালে জিডিপি-র নিরিখে মোদী সরকার ভারতকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছে বলে দাবি কেন্দ্রের শাসকদলের। পাল্টা বিরোধীদের অভিযোগ, দু’দফায় মোদীর সরকার দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেনি। রয়টার্সের সমীক্ষায় বিরোধীদের এই বক্তব্যেরই অনুরণন।

অপোজ়িশনের আরও বক্তব্য, ‘বিকশিত ভারত’-এর রথ ‘ধর্মীয় ভারত’-এর পথে ঘুরে গিয়েছে। রামমন্দির নির্মাণ ও একাধিক ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে যেন হারিয়ে গিয়েছে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। এই পরিস্থিতিতে ভারতে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বা ইকোনমিক গ্রোথ নিয়ে সহমত হলেও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন-ও।

তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সুরেই তাঁর প্রশ্ন, ‘এই আর্থিক বৃদ্ধির ফলে কি যথেষ্ট চাকরি তৈরি হচ্ছে?’ উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। ২০১৪-র নির্বাচনে জেতার পর বেশি করে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোদী সরকার। তারপর? লেবার ফোর্স সার্ভের পর্যায়ক্রমিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে বেকারত্বের হার ছিল ৩.৪ শতাংশ।

যা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সামান্য কমে হয় ৩.২ শতাংশ। অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ভারতে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৬ শতাংশ। এই হার যে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান না হওয়ারই ইঙ্গিতবাহী, তা বুঝতে সমস্যা হয় না।

ভারতে সোসাইটি জেনারেলের অর্থনীতিবিদ কুণাল কুণ্ডু বলেন, ‘এক দশকের বেশি সময় ধরে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হলেও সেখানে কর্মসংস্থানের কোনও ভূমিকা ছিল না। বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ায় কর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। নতুন চাকরি খোঁজার আগ্রহ কমে গিয়েছে তাঁদের। যে কারণে ভারতের লেবার ফোর্স পার্টিসিপেশন রেট এশিয়ার চারটি বড় অর্থনীতির মধ্যে সবচেয়ে কম।’

পরিকাঠামো, উৎপাদন এবং সরকারি চাকরির মতো যে ক্ষেত্রগুলি এতদিন কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, নতুন চাকরির জন্য সেগুলির উপরেই নির্ভর করে বিজেপি সরকার। যা কর্মসংস্থানের পালে তেমন একটা হাওয়া জোগায়নি। যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে না এগোলে যুবসমাজকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা ভারত হারাতে পারে বলে মনে করেন কুণাল।

তবে, এরই মধ্যে মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ইউএসএ-র ব্যাঙ্কিং সংস্থা জেপি মরগ্যান চেজ়-এর প্রধান জেমি ডিমন। নিউ ইয়র্কের ইকোনমিক ক্লাব আয়োজিত এক সভায় ডিমন বলেন, ‘ভারতে নরেন্দ্র মোদী অবিশ্বাস্য কাজ করেছেন। মোদী ৪০ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার বাইরে নিয়ে এসেছেন।’ পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং আমলাতন্ত্রে সংস্কার আনার ক্ষেত্রেও মোদীর কাজের প্রশংসা করেন ডিমন।

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-04-25T10:03:45Z dg43tfdfdgfd