দখল হয়ে যাচ্ছে শিলাইদহে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা

বারেবারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছেন শিলাইদহ। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহতে ছিল ঠাকুরবাড়ির জমিদারি। সেই জমিদারি দেখার জন্য অনেকবার কবিগুরু এসেছেন শিলাইদহ। সেখানেই আছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কুঠিবাড়ি। এই কুঠিবাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে পদ্মা নদী। এখানে বসেই সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, গীতাঞ্জলি লিখেছিলেন বিশ্বকবি।

আজও কবিগুরুর স্মৃতিধন্য সেই কুঠিবাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপত্য দেখতে আসেন কয়েক হাজার মানুষ। কিন্তু এই সময়েই সেই কুঠিবাড়ির আশেপাশের অনেক জায়গাই বেদখল হয়ে পড়ছে। সেখানে অযত্নে, অবহেলায় পড়ে আছে কবিগুরুর পরিবারের প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং অন্যান্য স্থাপত্য।

অরক্ষিত নানা স্থাপত্যসেই কুঠিবাড়ির পাশেই আছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত নানা স্থাপনা। সেগুলি আছে অরক্ষিত অবস্থায়। কুঠিবাড়ীর কাছেই পদ্মা নদীর তীরে দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে অবহেলায় অরক্ষিত হয়ে পড়ে রয়েছে কবিগুরুর পরিবারের প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিও। জানা গিয়েছে, ‘দ্য মহর্ষি চ্যারিটেবল ডিসপেনসারি’ নামের ওই দাতব্য চিকিৎসালয় থেকেই সেখানের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হত।

কবিগুরু যখন শিলাইদহে থাকতেন তখন তিনিও প্রজাদের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ওষুধ দিতেন। সেই চিকিৎসালয়টি এখন একটি পরিত্যক্ত ভবন। শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী তারেক হাসান বলেন, '৮০র দশক পর্যন্ত সেই চিকিৎসালয়টি কোনওরকমে টিকে ছিল। কিন্তু অযত্ন, অবহেলা আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি এখন পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে।' চিকিৎসালয়ের আশেপাশের জায়গাও দখল হয়ে গিয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিধ্বস্ত কাছারিবাড়িপাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক ড. আব্দুল আলীম জানান, পদ্মা নদী বেষ্টিত শিলাইদহ কুঠিবাড়ীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কবিগুরুকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছিল। সেখানের কুঠিবাড়ি থেকে, তিনি বোটে করে পদ্মা নদীতে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি বলেন, 'এই অঞ্চলের প্রকৃতি কবিগুরুর সাহিত্যে বিশেষ প্রভাব ফেলে। তিনি শুধুমাত্র জমিদারির কাজের জন্য নয়, এখানের মানুষের কথাও ভেবেছিলেন। তার ফলে কুঠিবাড়ীকেন্দ্রিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য অনেক স্থাপনা ও স্মৃতিচিহ্ন গড়ে ওঠে।'

কিন্তু দীর্ঘদিন অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকতে থাকতে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে কবিগুরুর পারিবারিক জমিদারির কাছারিবাড়ি। সেখানের বেশিরভাগ জমিও দখল হয়ে গিয়েছে।

সংস্কারের উদ্যোগতবে এখন এই কাছারিবাড়িটি সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। শিলাইদহ কুঠিবাড়ীর রক্ষক ও প্রত্নতাত্ত্বিক আধিকারিক জানান, সেখানে প্রায় ৫একর জায়গায় ছিল ওই কাছারিবাড়ি। কিন্তু তাদের দখলে আছে মাত্র ৬শতক জায়গা। তিনি জানান ৬০ লাখ টাকা ব্যয় করে পুরাতন আদলেই সেটি সংস্কার করা হচ্ছে। সেখানে একটি মিউজিয়ামও তৈরি করা হবে। পরে সেই দাতব্য চিকিৎসালয়টিও সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হবে।

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-05-09T10:09:10Z dg43tfdfdgfd