ইস্তেহার 'আউটসোর্স করছে' কংগ্রেস...' `বড় দাবি অমিত শাহের!

নয়াদিল্লি: “কংগ্রেসকে দেখে মনে হচ্ছে সংখ্যালঘু এবং চরম বামপন্থীদের সঙ্গে নিয়ে ইস্তেহার তৈরি করেছে।” দেশের সবচেয়ে পুরনো দলকে এই ভাষাতেই আক্রমণ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু তাই নয়, পার্সোনাল ল-এর প্রচার এবং তোষণের রাজনীতি করে কংগ্রেস দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।

নেটওয়ার্ক 18 গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল জোশীকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ জানান, বিরোধীদের আসল উদ্দেশ্য জনতার সামনে তুলে ধরতেই কংগ্রেসের ইস্তেহারের বিষয়গুলি সামনে এনেছে বিজেপি।

কোনও রাখঢাক না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টতই বলেন, “এই যুগে দাঁড়িয়ে কোনও রাজনৈতিক দল পার্সোনাল ল-এর কথা বলতে পারে? দেশ কি শরিয়ার ভিত্তিতে চলবে? একদিকে আমাদের ইস্তেহার, আমাদের সংকল্পপত্রে, ইউনিফর্ম সিভিল কোড আনার কথা বলা হয়েছে। অন্য দিকে, কংগ্রেস বলছে, পার্সোনাল ল-এর প্রচার করব। কংগ্রেসকে এর জবাব দিতে হবে, কারণ এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু”।

কংগ্রেসের ইস্তেহারে মুসলিম লিগের ছাপ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই কথা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তাঁর কথায়, “ওরা বলছে, দেশের সম্পদে সংখ্যালঘুদের অগ্রাধিকার। কে প্রথম সর্বনিম্ন, অতীতের পারফরম্যান্স কী, তাদের কাজ করার সামর্থ্য আছে কি না, এর ভিত্তিতে চুক্তি হবে নাকি ধর্মের ভিত্তিতে? ওরা কীভাবে দেশ চালাতে চায়? দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দীর্ঘদিন পর নরেন্দ্র মোদিজি দেশকে তোষণের রাজনীতি থেকে বের করে এনেছেন। ওরা আবার সেই দিকে নিয়ে যেতে চায়। কারণ জয় নিয়ে কংগ্রেসের আত্মবিশ্বাস নেই”।

অমিত শাহের মতে, সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিতরণের জন্য সংস্থান কোথা থেকে আসবে, সেই নিয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না কংগ্রেস। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বিবৃতি ছিল। খুব বিখ্যাত বিবৃতি, যে দেশের সম্পদের উপর প্রথম অধিকার সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে মুসলিমদের। এখন যদি সম্পদ বন্টনের কথা আসে, তাহলে সেটা সংস্থান থেকেই আসবে। জনগণের সম্পত্তি সরকার তা বণ্টন করবে। আমি বলছি, এটা যদি সত্যি না হয়, তাহলে এর প্রকৃত অর্থ কী সেটা কংগ্রেসের স্পষ্ট করা উচিত”।

জনগণের আর্থ সামাজিক অবস্থা নির্ধারণ এবং সেই অনুযায়ী সম্পদ পুনর্বন্টনের জন্য ‘দেশব্যাপী এক্স রে’ করার কথা বলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এটা ওদের চিন্তাভাবনা। আমি মনে করি, এরকম একটা পুরনো দল সংখ্যালঘু এবং চরম বামপন্থীদের কাছ থেকে ইস্তেহার আউটসোর্স করেছে’।

কংগ্রেসের সম্পদের পুনর্বন্টনের ভয়াবহতা বোঝাতে ‘মঙ্গলসূত্রও কেড়ে নেবে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়ে তুমুল হইচই হয়। অমিত শাহ বলছেন, ব্যক্তির সম্পদের মধ্যে সঞ্চয়, সম্পত্তি এবং স্ত্রীধন-ও রয়েছে।

উত্তরাধিকার কর নিয়েও কংগ্রেসকে একহাত নেন অমিত শাহ। ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের সভাপতি স্যাম পিত্রোদা সম্পদের পুনবর্ন্টন নিয়ে বলতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাধিকার ট্যাক্সের বিষয়টা টেনে এনেছিলেন। তাঁকেও খোঁচা দেন শাহ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয়, স্যাম পিত্রোদা গজদন্ত মিনারে বাস করছেন। ভারতের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, এ দেশের মানুষের মনোভাব সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারনা নেই”।

বিজেপি কি উত্তরাধিকার কর আনতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে অমিত শাহ বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে জনগণের সামনে আমাদের সংকল্পপত্র রেখেছি। ওখানেই সব লেখা আছে। আমরা কোনও কিছু গোপন করি না”।

নেটওয়ার্ক 18-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই কথা বলেছিলেন যে বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গী স্পষ্টভাবে ঘোষণাপত্রে তুলে ধরা হয়েছে। সঙ্গে উত্তরাধিকার করের মতো আইন আনার চিন্তাভাবনা পদ্মশিবিরের নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির পরিকল্পনা ইস্তেহারে লেখা আছে…বিজেপির আদর্শ স্পষ্ট। আমরা আমাদের ইস্তেহার ও কাজ নিয়ে দেশের সামনে যাই। দয়া করে ওদের মহান চিন্তা আমাদের উপর চাপিয়ে দেবেন না”।

সঙ্গে মোদি যোগ করেছিলেন, “আমি উন্নয়ন ও উত্তরাধিকারের কথা বলছি। ওরা সেই উত্তরাধিকার লুটতে চাইছে। ইস্তেহারে ওরা যা উল্লেখ করেছে, এখনও পর্যন্ত সেগুলোই করে এসেছে। এটাই ওঁদের ইতিহাস। দেশকে ওরা যেদিকে নিয়ে যেতে চায়, দেশবাসীকে সেটা জানানো আমার কর্তব্য। এখন যেতে চান কি না সেটা সিদ্ধান্ত আপনিই নিন। কিন্তু এটা আমার দায়িত্ব যে তথ্য ও গুরুত্বের ভিত্তিতে আমি আপনাকে সত্যিটা বলব”।

2024-05-02T06:53:16Z dg43tfdfdgfd