ODISHA TRAIN ACCIDENT: 'চোখ বুজলেই লাশের পর লাশ...', দুর্ঘটনার ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না সরডিহার ১১ জন

শরীরের ক্ষত তো মিটবে একদিন না একদিন, কিন্তু মনের আঘাত মিটবে কবে। চোখ বন্ধ করলেই চোখের সামনে সারি সারি লাশ। শনিবার রাতে বাড়ির উদ্দেশে অবশেষে রওনা হতে পেরেও এখনও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারছেন না সন্দেশখালির ১১ জন। মধ্যমগ্রামে জেলা প্রশাসনের হেল্প ডেস্কের সাহায্য ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর অবশেষে ক্ষতবিক্ষত শরীর ও মন নিয়ে অবশেষে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা।

শুক্রবার একসঙ্গে তিনটি ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ওডিশার বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে মালগাড়িকে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই ঘটনার জেরে বেলাইন হয়ে যায় যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস। শতাব্দীর সবথেকে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী গোটা দেশ। ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৯৫। আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।

ওই অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করেই কেরালায় কাজে যাচ্ছিলেন সন্দেশখালি থানার সরবেড়িয়া থেকে ১১ জন। তাঁরা সেই বীভৎস অভিজ্ঞতার কথা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না তাঁরা। কাজের উদ্দেশ্যে যেতে গিয়ে বালাশ্বরে কিছু পরে হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটে । সেই দলে থাকা একজন বলেন, ''আচমকা টাইম বোম ফাটার মতো বিকট শব্দ। তারপরেই হঠাৎ তীব্র যন্ত্রণা। হাতে, পায়ে, মাথায় ও কোমরে সকলেরই আঘাত। বাইরে কোনওমতে বেরিয়ে দেখি বীভৎস অবস্থা।''

এই আঘাত তো নয়, একদিন ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু মনের আঘাত মিটবে কবে। মারাত্মক আতঙ্কগ্রস্থ সন্দেশখালির ওই বাসিন্দারা। চোখ বন্ধ করলেই খালি ওই বীভৎস দৃশ্য ভেসে উঠছে তাদের চোখে। শরীরের আঘাতের থেকেও এখন সবথেকে বড় আঘাত মনের। আতঙ্কে এখনও স্বাভাবিক হতে পারছেন না তাঁরা।

দুর্ঘটনার পর বাড়ি ফেরা নিয়েও তৈরি হয় আরও এক লড়াই। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে হাওড়া থেকে কীভাবে বাড়ি ফিরবেন বুঝতে পারছিলেন না কেউই। অবশেষে হাওড়া পৌঁছনোর পর মধ্যমগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ঘরে পৌঁছেছেন তারা। মধ্যমগ্রামে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় হেল ডেস্ক চালু করা হয়েছে। হাওড়া থেকে বেঁচে ফেরা মানুষদের সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেন। গাড়িতে করে ওই ১১ জনকে প্রথমে মধ্যমগ্রামে আনা হয়। সেখানেই তাদের আরও একবার প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়,এবং কিছু খাবারের ব্যবস্থা করা হয়,তারপরই তাদেরকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।

মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবস্থা করা হয়েছে হাওড়া স্টেশন থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে মাঝরাতেই আবার বাড়ির জন্য গাড়িতে তুলে পাঠানো হয় তাঁদের। বাড়িতে ফিরতে পারছেন এই ভেবে সরবেডিয়ার এই মানুষজন স্বভাবতই খুশি।

প্রশাসন সূত্রে খবর, এই দুর্ঘটনায় মৃত ২৯৫ জনের মধ্যে রয়েছেন এরাজ্যের হতভাগ্য ৩১ জন। জানা গিয়েছে, ২৪ পরগণা জেলা থেকেই মৃতের সংখ্যা সব থেকে বেশি। প্রাণে বেঁচে ঘরে ফিরেছেন ৩০ জন। সেই তালিকায় রয়েছে সরডিহার ওই ১১ জনও।

2023-06-04T05:02:07Z dg43tfdfdgfd