RAIL GATE CROSSING : তালিত রেলগেট উড়ালপুল নিয়ে টানাপড়েন কীর্তি-আলুওয়ালিয়ার

রূপক মজুমদার, বর্ধমানভোটের মুখে ফের আলোচনায় বর্ধমান-সিউড়ি (জাতীয় সড়ক ২বি) রাস্তার উপরে থাকা তালিত রেলগেট। একবার গেট পড়লেই লাগে যানজট। জট কাটাতে কখনও কখনও তিন-চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। তাই প্রয়োজন একটি উড়ালপুলের। সেই দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, এমনকী পর্যটকরাও।

২০১৪, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থীদের মুখে ছিল দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি। জয়ী সাংসদরাও আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিদায়ী বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়ার দাবি, তাঁর উদ্যোগে এ নিয়ে রেলমন্ত্রক থেকে প্রকল্পের বাজেটও করানো হয়েছিল। তবে এতকিছুর পরেও উড়ালপুলের কাজ সেই তিমিরেই। ভোগান্তি চলছে সাধারণ মানুষের।

এদিকে, এবারের ভোটে প্রচারে নেমে তালিত রেলগেটের সমস্যা জেনেছেন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদও। জয় নিয়ে আশাবাদী প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেছেন, ‘জেতার পর আমার প্রথম কাজই হবে তালিতে উড়ালপুল তৈরি। আর সেটা আমি করবই।’ একইসঙ্গে এ নিয়ে বিদায়ী সাংসদকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি কীর্তি। তাঁর অভিযোগ, ‘আলুওয়ালিয়াজি কোনও উদ্যোগই নেননি।’ যা মানতে নারাজ আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী ও বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিদায়ী সাংসদ সুরিন্দরজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া।

গত শনিবার বর্ধমান শহরের টোটো ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকের পরে কীর্তি আজাদ বলেন, ‘জেতার পরে বর্ধমান-সিউড়ি রাস্তার তালিত রেলগেটের উপরে উড়ালপুল তৈরির জন্য রেলমন্ত্রকের কাছে দরবার করব। আগের সাংসদ আলুওয়ালিয়াজি এই নিয়ে কিছুই করেননি। আসলে তিনি তো পিছনের বেঞ্চের সাংসদ ছিলেন। ফলে ওঁর কথার কোনও গুরুত্ব ছিল না সংসদে। পাঁচ বছরে নিজের সংসদ এলাকায় কী কাজ করেছেন তা দেখাতে পারছেন না। শুধু কাজ করব বলে চিঠি দেখাচ্ছেন।’

বর্ধমান-সিউড়ি রাস্তায় তালিত রেলগেট অনেকের কাছে মাথাব্যথার কারণ। বারেবারেই এখানে উড়ালপুর তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কেউ সে ভাবে উদ্যেগ নেননি বলেই অভিযোগ এলাকাবাসীর। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী যদি জেতেনও, তা হলে তাঁকে সংসদে বসতে হবে বিরোধী আসনে। সেক্ষেত্রে কীভাবে তিনি রেলের কাছ থেকে উড়ালপুল আদায় করতে পারবেন?

এই প্রশ্নে কীর্তির জবাব, ‘আমি তিনবারের সাংসদ। একবারের বিধায়ক। আমি জানি কীভাবে কাজ করাতে হয়। কাজ করতে না-পারলে আমাকে তিনবার মানুষ লোকসভায় পাঠাতেন না। ফলে আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি, আমার প্রথম লক্ষ্যই হবে তালিতে উড়ালপুল তৈরি। আর সেটা আমি করবই। আলুওয়ালিয়াজি এ নিয়ে কোনও উদ্যোগ নেননি, সেটা সবাই জানে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন এসএস আলুওয়ালিয়া। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি তালিতের উড়ালপুল তৈরি নিয়ে রেলমন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলি। তারা স্কেচ ম্যাপ তৈরিও করেন। প্রকল্পের বাজেট তৈরি হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের অসহযোগিতায় এই উড়ালপুল তৈরি করা সম্ভব হয়নি। রেলের অংশ বাদ দিয়ে বাকি কাজটা রাজ্য সরকারের করার কথা। সেই কাজে তৃণমূল সরকার সহযোগিতা করেনি। আর সেজন্যই কাজ আটকে রয়েছে।’

আলুওয়ালিয়ার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে কীর্তি আজাদ বলেন, ‘উনিতে সবেতেই কাগজ দেখাতে ভালোবাসেন। ওনাকে বলুন রেল রাজ্য সরকারকে যে চিঠি দিয়েছিল সেটা দেখাতে। আসলে ভোটের আগে এসব মিথ্যা বলে উনি গিমিক করতে চাইছেন। সাধারণ মানুষের কথা ভাবলে এটা নিয়ে প্রয়োজনে উনি আন্দোলন করতে পারতেন। সেটাও তো করেননি। তাই মানুষ জানে কারা করতে পারবে আর কারা পারবে না।’

এই রাজনৈতিক টানাপড়েনে সাধারণ মানুষকে ভুগতে হচ্ছে বলে জানান তালিতের বাসিন্দা শেখ আবসার। তিনি বলেন, ‘ভোট এলেই তালিতের উড়ালপুলের কথা শোনা যায় নেতাদের মুখে। ভোট মিটলেই সেই কথা হারিয়ে যায়। আগের বার বিজেপি প্রার্থী আলুওয়ালিয়া বলেছিলেন উড়ালপুল করবেন। জিতলেন। নিয়ম করে ভুলেও গেলেন। তারও আগে ২০১৪ সালে তৃণমূলের মমতাজ সঙ্ঘমিতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এই উড়ালপুল নিয়ে। তিনিও কথা রাখেননি। এবার আবারও সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া শুরু হয়েছে। বাস্তবে উড়ালপুল তৈরি হবে কিনা কেউ বলতে পারবে না।’

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-04-17T06:32:44Z dg43tfdfdgfd