RAM NABAMI 2024: রামের মিছিলে মিশে গেল দুই ফুল

অশীন বিশ্বাস, ভাটপাড়া

প্রায় পাঁচশো বছরের অপেক্ষা। অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে এ বার রামনবমী নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস ছিল রাম ভক্তদের মধ্যে। তারই আভাস বুধবার পাওয়া গেল ভাটপাড়া, জগদ্দল এলাকায়। পিছিয়ে ছিল না নৈহাটি, বীজপুর, টিটাগড়, পানিহাটিও। হাজারে হাজারে মানুষ এ দিনের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। কোথাও সামনের সারিতে শাসক দলের নেতারা, কোথাও আবার বিজেপির নেতারা। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রামনবমী ছিল কার্যত ভোটের আগে ওয়ার্মআপ। এমনকী একই মিছিলে শাসক-বিরোধী যুযুধান দুই পক্ষও হেঁটেছেন অম্লান বদনে।

তবে এ দিন পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভাটপাড়ায় রামনবমীর শোভাযাত্রায় ফের অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখল মানুষ। ওই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। কাঁকিনাড়া আর্য সমাজ মোড় থেকে ডিজে সাউন্ডের তালে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ভাটপাড়া মোড় হয়ে কাঁকিনাড়া হনুমান মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ঘোষপাড়া রোড পুরো অবরুদ্ধ হয়ে যায়। বন্ধ ছিল সমস্ত যান চলাচল। বন্ধ ছিল দোকানপাটও।

পুলিশ প্রথমে হাতে অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের সরিয়ে দিলেও পরে সংখ্যাটা এতটাই বেড়ে যেয় যে পুলিশকেও কার্যত পিছিয়ে যেতে হয়। সোর্ড, দা, তরোয়ালের মতো ধারালো অস্ত্র নিয়ে রামের নামে স্লোগান এবং সঙ্গে ডিজের তালে উদ্দাম নাচ। গরম উপেক্ষা করে শোভাযাত্রায় মহিলারাও অংশ নিয়েছিলেন। শোভাযাত্রায় অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে অর্জুন সিং বলেন, ‘রামনবমীতে অস্ত্র ব্যবহারের পরম্পরা আছে। এটা কেউ আটকাতে পারবে না। আর আদালতের যে নির্দেশের কথা বলা হচ্ছে সেটা হাওড়ার জন্য।’

উল্লেখ্য ওই শোভাযাত্রায় সামনের দিকে অর্জুন সিং থাকলেও পিছনের সারিতে ছিলেন ভাটপাড়ার উপপুরপ্রধান দেবজ্যোতি ঘোষ, পুর পারিষদ সদস্য অমিত গুপ্তা, জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের ভাই সঞ্জয় শ্যাম-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের পানীয় জল দিতে প্রায় ১০টি ক্যাম্প করা হয় ঘোষপাড়া রোডের দু’ধারে।

কোনওটা সামলাচ্ছিলেন অর্জুন সিংয়ের ভাইপো তৃণমূল নেতা সৌরভ সিং, কোনওটিতে তৃণমূল কাউন্সিলার গোপাল রাউত, আবার কোনওটিতে ছিলেন বিজেপি নেতারা৷ বড় মসজিদের কাছে ধরা পড়ল সম্প্রীতির ছবি। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের কাউকে ফুল দিলেন, আবার কারও হাতে তুলে দিলেন ঠান্ডা পানীয়।

আর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জগদ্দল থানা সংলগ্ন বিচুলি ঘাট থেকে আর্য সমাজ হয়ে সার্কাস মোড়ে শেষ হয়। যার সামনের সারিতে ছিলেন জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। পরে ওই শোভাযাত্রায় অর্জুনের পুত্র ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিংও অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় করেন অগণিত সাধারণ মানুষ।

নৈহাটি গৌরীপুর মোড় থেকে নৈহাটি পুরসভা পর্যন্ত রামনবমীর শোভাযাত্রায় অংশ নেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। তবে তৃণমূলের কোনও মিছিলেই একটিও অস্ত্র দেখা যায়নি। পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘রাম কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অস্ত্র ছাড়াই মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন।’ রামনবমীর মিছিলে হাটতে হাটতে রাস্তার দু’ধারে বাচ্চাদের হাতে চকোলেট তুলে দেন পার্থ।

বীজপুরেও শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা হয়েছে। টিটাগড়ে তিনটি মিছিল হয় রামনবমীর৷ পানিহাটি স্বদেশি মোড় থেকে বিটি রোড ধরে ঘোলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত একটি রামনবমীর শোভাযাত্রা হয়। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘মোটের উপর শান্তিতেই হয়েছে রামনবমীর শোভাযাত্রা।’ অস্ত্রের ব্যবহার প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, ‘আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-04-18T11:48:34Z dg43tfdfdgfd