পানীয় জলের ভয়াবহ সংকটের মুখে শিলিগুড়ি পুরসভা, পরিস্থিতি মোকাবিলায় নয়া উদ্যোগ

সিকিম বিপর্যয়ের কথা নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে। দক্ষিণ লোনাক হ্রদ উপচে জলে প্লাবিত হয়েছিল সিকিম। যার রেশ ভোগ করতে হয়েছিল উত্তরবঙ্গের কিছু জেলাকে। তার জেরে গজলডোবায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তিস্তার বাঁধ। সামনে বর্ষা। তার আগে এই বাঁধ মেরামত করা প্রয়োজন। আজ, শুক্রবার থেকে জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজের জেরে ফুলবাড়ির দিকে তিস্তা ক্যানালে জল আসবে না। এই জল না এলে শিলিগুড়ি শহরে জল সরবরাহ করা যাবে না। কারণ ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে ক্যানাল থেকে জল মিলবে না। তাই পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর জলের সমস্যা মেটাতে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো থেকে শুরু করে পাউচ বিলি—বিকল্প ব্যবস্থা করছে শিলিগুড়ি পুরসভা।

জল না পেলে মানুষের দৈনন্দিন কাজ আটকে যাবে। তাই জলের সমস্যার কথা জানতে বাসিন্দাদের জন্য শিলিগুড়ি পুরসভা ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খুলেছে। যার যোগযোগের ফোন নম্বর ৭৫৫৭০৩৫১৯৪। ইতিমধ্যেই পাইপ ফেটে ৩৬ থেকে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব এই বিষয়ে বলেন, ‘মানুষের অসুবিধা হচ্ছে বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরাও নিরুপায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা বাঁধ সারানো দরকার। না হলে, বর্ষায় প্লাবিত হবে এলাকা। এই কাজ সেচ দফতরকে করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে দিনরাত কাজ করে সমস্যা মেটাতে।’‌

আরও পড়ুন:‌ বাস ভাড়ার তালিকা টাঙাতে নির্দেশ পরিবহণ দফতরের, চাপে পড়ল বাসমালিক সংগঠন

এখন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে দিয়ে বিকল্প ‘ইনটেক ওয়েল’–এর কাজ শুরু করা হয়েছে। মেয়র অভিযোগ করেন, ‘‌গত ৪০ বছরে বামেরা কাজ করেনি। তাই এখন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যে জল মজুত আছে সেটা থেকে তিন চারদিন এখন সংকট মিলবে। তিস্তার জল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন প্রকল্প পরিকল্পনায় আছে। লিঙ্ক ক্যানালে তিস্তার জল বন্ধ হয়ে গেলেও মহানন্দার জল পরিস্রুত করে বাসিন্দাদের দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ জল বন্ধ হবে না। ২১টি জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হবে নানা ওয়ার্ডে। তিন হাজার জলের ‘পাউচ’ প্রত্যেক বরোতে রোজ বিলি করা হবে।’‌

ইতিমধ্যেই নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। জলের ট্যাঙ্ক থেকে জলের পাউচ সরবরাহ করে জলের সংকট মেটাতে চাইছেন মেয়র। আসলে মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়েন জল নিয়ে সেদিকে কড়া নজর রাখছেন তিনি। হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাকে জল পৌঁছে দেওয়া হবে। শিলিগুড়ি পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্তের বক্তব্য, ‘‌সেচ দফতর থেকে জানা গিয়েছে, মহানন্দায় এখন প্রচুর পরিমাণ জল প্রবাহিত হয়। তাই ইনটেক ওয়েলে জলস্তরের উচ্চতা ১০৭.৩৫ মিটার রাখতে পারলে বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’‌

2024-05-10T10:19:23Z dg43tfdfdgfd