আরজি করে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ করে ও নির্যাতিতার বিচার চেয়ে, রবিবার শহরজুড়ে ছিল ‘তিলোত্তমা’দের মহামিছিল। যাতে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, পা মিলিয়েছিল বেশ কিছু তারকা। ছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, দিতিপ্রিয়া রায়, উষসী চক্রবর্তী, সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এমনকী, ধর্মতলায় সারা রাত জেগে ধরণাও দেন তাঁরা। এরই মাঝে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের বক্তব্যে সামনে আসে। তিনি প্রশ্ন তুলে বসেন, ‘কর্মবিরতিতে থাকা সরকারি কর্মচারিরা কি বেতন বা বোনাস নেন না?’
এবার কাঞ্চন মল্লিককে এক হাত নিলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। ইন্ডাস্ট্রির সহ-অভিনেতার উদ্দেশে তিনি ফেসবুকে লিখলেন, ‘মাননীয় বিধায়ক শ্রী কাঞ্চন মল্লিক, এটা আপনি কী বললেন? কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তাররা সরকারি চাকরি করেন বলে তাঁদের কর্মস্থলে দিনের পর দিন ধরে ঘটে যাওয়া, সরকারের অন্যায় কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন না? সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে হতাশা বা উষ্মা প্রকাশ করতে গেলে একজন সরকারি চাকুরিজীবীর মাইনে নেওয়া যাবে না? বিচারের দাবিতে মিছিলে গেছেন বলে তাঁদের পুজোর আগে প্রাপ্য বোনাস নিয়ে খিল্লি করে বলবেন, ‘বোনাস টোনাস যে হয়, সেটা নেবেন তো, না নেবেন না?’ 'চাকরি' শব্দটা তো আপনি literally নিয়ে নিয়েছেন মশাই!!!! সরকারি হাসপাতালের সরকারি কর্মচারীর নৃশংস ভাবে ধর্ষিত ও খুন হয়ে যাওয়া তিলোত্তমার মা-বাবাকে 'মেয়ে আত্মহত্যা করেছে' বলল কেন-- এই প্রশ্ন করার আগে সরকারের দেওয়া পুরস্কার ফেরত দিয়ে দিতে হবে? না, মানে, বিবেকের তাড়নায় কেউ ফেরত দিতেই পারেন। কিন্তু সেটাই pre condition নাকি?’
‘দেওয়ালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি ঝুলিয়ে রেখে এই নির্লজ্জ কমেডি করার আগে একবার ও ভাবলেন না? আপনার কমেডি অভিনয়ই কিন্তু মানুষের মনে একদিন আপনার পাকাপাকি স্থান দিয়েছিল। আমিও তার ফ্যান। কিন্তু আজ যেটা করলেন, ওটা কমেডিও হয়নি, অভিনয়ও হয়নি। ওটা কিছুই হয়নি। আপনার শুভ বুদ্ধি র উদয় হোক শিগগিরই, এই কামনা করি।’, কাঞ্চনের সমালোচনায় আরও লেখেন সুদীপ্তা।
‘এই সরকারি পুরস্কার অনুষ্ঠানগুলোয় আমার বহু বছর যাওয়া হয়ে ওঠে না। আচ্ছা, ওখানে পুরষ্কার দেওয়ার আগে কি এইগুলো বলে দেওয়া হয়? মানে পুরস্কার পাওয়ার পরের Dos and Don'ts গুলো কী ও কয় প্রকার....? না, মানে জানতে চাইছি আর কি।’, কাঞ্চনকে ঠুঁকে নিজের লেখা শেষ করেন অভিনেত্রী।
প্রসঙ্গত, সেভাবে কখনোই আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হননি কাঞ্চন মল্লিক। তাঁর তৃতীয় ও বর্তমান স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টোরাজ সোশ্যাল মিডিয়ায় দু-একটা পোস্ট করেছিলেন অবশ্য। ১৪ অগস্ট মেয়েদের রাত দখলের রাতেও হেঁটেছিলেন রাস্তাতে। তবে কাঞ্চন বা শ্রীময়ী ছিলেন না ছোট পর্দা বা বড় পর্দার শিল্পীদের ডাকা প্রতিবাদ মিছিলে।
রবিবার গভীর রাতের দিকে আরও একটি পোস্ট করেন সুদীপ্তা। সেখানে তিনি সরাসরি কাঞ্চন মল্লিককে ত্যাগ করার কথা লেখেন। অভিনেত্রী ফেসবুকে খোলা চিঠি দেন একসময়ের বন্ধুকে। যাতে লেখা, ‘এক সময়ের বন্ধু/ সহকর্মী Kanchan Mullick, তোকে ত্যাগ দিলাম। অনুপ্রেরণার লকারে চোখ, কান, মাথা,মনুষ্যত্ব, বিবেক, বুদ্ধি, বিবেচনা, শিক্ষা সব ঢুকিয়ে রেখে চাবিটা হারিয়ে ফেলেছিস মনে হয়। চাবিটা খুঁজে পেলে খবর দিস বন্ধু। তখন আবার কথা হবে, আড্ডা হবে।’
সঙ্গে এটাও জানাতে ভোলেন না, কেন তিনি সরাসরি ম্যাসেজ না পাঠিয়ে এভাবে ফেসবুকে পোস্ট করলেন। কারণ কাঞ্চন আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ করা জুনিয়র ডাক্তার ও শিল্পীদের একহাত নিয়েছিলেন মিডিয়ার সামনে। আর তাই সুদীপ্তার জবাব এল ফেসবুকে।
2024-09-02T01:51:40Z dg43tfdfdgfd