বিপুল আপগ্রেডেশনেও শুধু কলেজ অপশনে সিট ফাঁকাই

আইএসসি-র বেস্ট অফ ফোরে এক ছাত্রীর প্রাপ্ত মার্কস ৯৪%। উচ্চ মাধ্যমিকে এক ছাত্র পেয়েছে ৯০ শতাংশ মার্কস। তার পরেও রাজ্যের কলেজে ভর্তির অভিন্ন পোর্টালের (ক্যাপ) মাধ্যমে পছন্দের কলেজে তারা মনমতো বিষয় পায়নি! অথচ সেই সব কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বহু আসন এখনও ফাঁকাই।

এই পরিস্থিতিতে অনেক পড়ুয়াই এমনকী প্রথম দফায় কলকাতার কলেজে ভর্তি হয়েও তা বাতিলের পথে হাঁটছে। আবার একাংশ ভর্তি না হয়ে মপ-আপ অথবা দ্বিতীয় রাউন্ডে নতুন করে আবেদনের অপেক্ষায়। ভর্তির জন্যে আবেদনকারী ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা জানাচ্ছেন, ক্যাপ-এর মাধ্যমে ভর্তির আবেদনে শুধু ২৫টি পছন্দের কলেজ বাছার অপশন দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু পছন্দের কলেজে মনের মতো সাবজেক্ট বাছার সুযোগ ছিল সীমিত। প্রথম বিষয়টি ধরেই পোর্টাল সিট অ্যালট করেছে। সে ক্ষেত্রে আবার পছন্দের কলেজে সুযোগ মেলেনি। কলা ও বিজ্ঞান শাখার এক-এক জন পড়ুয়া দু’টি বা তিনটি বিষয়ে অনার্স পড়তে সর্বোচ্চ ২৫টি কলেজে অপশন দিয়েছিল। কিন্তু ক্যাপ-এ বিষয়ের অপশনের চেয়ে কলেজভিত্তিক অপশনে জোর থাকায় যোগ্যতা সত্ত্বেও পছন্দের কলেজে মনের মতো বিষয়ে ভর্তির সুযোগ মেলেনি অনেকেরই।

এর ফলে আবার কলেজগুলিতে নানা বিষয়ে প্রচুর আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তাই বুধবার ১ লাখ ২১ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রীর সিট আপগ্রেডেশনের পরেও পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে বহু কলেজের অধ্যক্ষের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। এক ছাত্রীর কথায়, ‘কলকাতার ১২টি কলেজে আবেদন করেছিলাম। যার মধ্যে ন’টি কলেজে সাইকোলজিতে। আর তিনটি কলেজে হিস্ট্রিতে। পরে আসন না পাওয়ার আশঙ্কায় প্রথম দফায় যোগমায়া দেবী কলেজের সাইকোলজিতে নিমরাজি হয়েই ভর্তি হয়েছি। বুধবার যে সিট আপগ্রেডেশন হয়েছে, তাতে আমার কোনও উন্নতি হয়নি। অথচ পোর্টালে দেখা যাচ্ছে, চার বছরের ইতিহাস (অনার্স) কোর্সে তিনটি কলেজেই (জয়পুরিয়া, মৌলানা আজাদ, লেডি ব্রেবোর্ন) মেরিট লিস্ট ও জিএমআর র‍্যাঙ্কিংয়ে ‌আমার পজিশন ভালোই। কিন্তু ন’টি কলেজে সাইকোলজি অপশন দিয়ে ফেলায় এখন হিস্ট্রি পেতে প্রবল সমস্যায় পড়ছি।’

মহানগরের ১৭টি কলেজে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় আবেদনকারী এক ছাত্রের অভিজ্ঞতাও একই রকম। এ প্রসঙ্গে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, অপশন দেওয়ার ক্ষেত্রে পছন্দের কলেজই সব। বিষয় গুরুত্ব পায়নি। তাঁর কথায়, ‘পছন্দের কলেজ ও চাহিদা মতো বিষয় পেতে হলে যারা প্রথম দফায় ভর্তি হয়েছে, তা বাতিল করে নতুন করে মপ-আপ রাউন্ডে আবেদনের জন্যে নাম লেখাতে হবে।’

লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষ শিউলি সরকার বলেন, ‘খুব ধীর গতিতে ভর্তি হচ্ছে। আমাদের অর্ধেকেরও বেশ সিট ফাঁকা। আপগ্রেডেশনে যে ২৪৯ জনকে আসন বরাদ্দ করা হয়েছে, তাদের মধ্যেও মাত্র ৩০ জন আগ্রহ দেখিয়েছে। ইংরেজি ও মাইক্রো-বায়োলজিতেও সিট ভরছে না। সেটাই উদ্বেগের।’

সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর জানান, কমার্স ও সাইকোলজির সিট ফাঁকা পড়ে। আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবির কথায়, ‘জিয়োলজি, কম্পিউটার সায়েন্স ও বায়োকেমিস্ট্রিতে অন্য বছর সব আসন ভরে গেলেও এ বার অনেক আসনই ফাঁকা। ক্যাপ-এর মাধ্যমে ভর্তি পদ্ধতিতে বিভ্রান্তি মেটাতে কতৃর্পক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ করা উচিত।’

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-07-27T06:44:41Z dg43tfdfdgfd