WOMAN PEE IN PUBLIC : নেই শৌচাগার, অগত্যা প্রকাশ্যেই প্রস্রাব! রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লজ্জিত প্রৌঢ়ার

বেড়াতে গিয়ে বিপাকে প্রৌঢ়া। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে খুঁজেও মেলেনি কোনও পাবলিক টয়লেট। নিরুপায় হয়ে রাস্তার ধারেই শৌচকার্য সারতে হল তাঁকে। ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে এই মহিলা শেষ পর্যন্ত এই নিয়ে অভিযোগ জানালেন দেশের রাষ্ট্রপতিকে। রীতিমতো চিঠি লিখে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে এই সমস্যার কথা তুলে ধরলেন ৫২ বছরের জাদেম্মা।

কর্নাটকের বল্লারি এলাকার বাসিন্দা জাদেম্মা। সম্প্রতি ৫২ বছরের এই মহিলা চিক্কামাগালুরুর বাবা বুন্দগিরি পাহাড়ের দত্তপীঠে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে পর্যটনস্থলে তাঁর প্রস্রাব পেয়েছিল। কিন্তু, এই টুরিস্ট স্পটে কোনও শৌচালয় খুঁজে পাননি তিনি। দীর্ঘক্ষণ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ব্যর্থ হন মহিলা। শেষ পর্যন্ত তিনি রাস্তাতেই প্রস্রাব করতে বাধ্য হন জাদেম্মা।

নিজের কষ্টের কথা তুলে ধরতে তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হয়েছেন। অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে জাদেম্মা তাঁকে একটি চিঠি লেখেন। তাঁর বক্তব্য, "আমি একজন অত্যন্ত সাধারণ মানুষ। আমার মতো প্রৌঢ়ারা প্রতিদিনই তীর্থস্থানে বেড়াতে যান। কিন্তু, সেখানে একটিও শৌচালয় না থাকলে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। আপানর কাছে করজোড়ে প্রার্থনা করছি, যাতে এই পর্যটন স্থলগুলিতে দ্রুত শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়।"

নিজের সমস্যার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কর্নাটের তীর্থযাত্রী জাদেম্মা রাষ্ট্রপতিকে বলেন, "আমি সম্প্রতি বাবুদঙ্গগিরি দত্তপীঠে বেড়াতে গিয়েছিলাম। মুল্লাইয়াঙ্গগিরি এবং সীথালাইয়াঙ্গগিরিতেও গিয়েছিলাম। কিন্তু, সেখানে গিয়ে একটা সময় আমার প্রস্রাব পায়। কিন্তু, অনেক খুঁজেও আমি একটি পাবলিক টয়লেট খুঁজে পাইনি। প্রস্রাব চেপে রেখেই আমাকে মুল্লাইয়াঙ্গগিরি পাহাড়ে চড়তে হয়। ভেবেছিলাম অন্তত সেখানে বুঝি একটি শৌচাগার কিংবা বিশ্রামাগার থাকবে। কিন্তু, আশাই সার।"

প্রৌঢ়া আরও লেখেন, "সীতালাইয়াঙ্গগিরিতে আমি আর প্রস্রাব চেপে রাখতে পারিনি। অগত্যা আমায় রাস্তার ধারেই একটি স্থানে প্রস্রাব করতে হয়। ঘটনায় আমি অত্যন্ত লজ্জিতবোধ করছি।"

রাষ্ট্রপতির কাছে প্রৌঢ়া করজোড়ে আর্জি জানিয়ে বলেন, "প্রতিদিন অসংখ্য বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, প্রবীণ নাগরিকরা বিভিন্ন তীর্থস্থানে পুণ্য অর্জনের আশায় যান। কিন্তু, এই ধরণের পর্যটন স্থলে কোনও শৌচালয় না থাকা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষেরই পথে ঘাটে শৌচালয়ের প্রয়োজন রয়েছে। যা না থাকায় আমাদের গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আপনি দেশের সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। আপনার হাতে তো সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে। দেশের মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করা আপনার কাজ। মহিলাদের জন্য এভাবে রাস্তায় শৌচকার্য করা খুব সম্মানহানিকর। আপনি একজন মহিলা হয়ে আশা করি এই সমস্যা বুঝতে পারছেন।"

প্রৌঢ়ার আরও সংযোজন, "যে পুণ্যস্থানে প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষ যাচ্ছেন, সেখানে একটিও পাবলিক টয়লেট না থাকা সংবিধানের ১৯ এবং ২১ নম্বর ধারা উলঙ্ঘন করার সমতুল্য। যেখানে আমরা চাঁদে পৌঁছে যাচ্ছি, সেখানে তীর্থস্থানে একটি পাবলিক টয়লেট না থাকা দুর্ভাগ্যজনক।"

নিজের চিঠিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন জাদেম্মা। তাঁর কথায়, "ভারতকে ডায়াবেটিস ক্যাপিটাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে সুগারের রোগীদের পাবলিক টয়লেটের অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে। আপনি যদি আমাদের এই সমস্যার সমাধান করেন তবে আপনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকব।"

কেবলমাত্র চিক্কামাগালুরুর এই তীর্থস্থানই নয়, দেশের অন্য পুণ্যস্থানেও একাধিকবার মহিলা পর্যটকদের থেকে এই ধরণের অভিযোগ সামনে এসেছে। তবে কর্নাটকের এই অঞ্চল থেকে বারবার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে।প্রিয়া নামে জনৈক তীর্থযাত্রীর কথায়, "বিদেশি পর্যটকরা এখানে এসে কোনও শৌচালয় দেখতে না পেয়ে হয়ত মনে করেন, কর্নাটক সরকার স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। কেবলমাত্র টয়লেটই নয়, খাবার জলের বোতলের দামও এখানে আকাশছোঁয়া। মধ্যবিত্ত পর্যটকদের থেকে এক বোতল জল বাবদ মোটা টাকা হাঁকিয়ে নেন বিক্রেতারা। খাবার জল এই তীর্থস্থানে বিনামূল্যে দেওয়া উচিত।"

অনুষা নামে আরও এক তীর্থযাত্রীর কথায়, "এটাই কর্নাটকের সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়া। কিন্তু, পাবলিক টয়লেটের অভাবে মহিলা পর্যটকরা এখানে যেতে চান না। ছেলেদের মতো মহিলারা রাস্তায় শৌচকার্য করতে সমস্যায় পড়েন। ফলে অবিলম্বে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা প্রয়োজন।"

2023-06-10T14:06:26Z dg43tfdfdgfd