‘দুর্নীতিকে স্বাভাবিক ভাবলে চলবে না, দেশের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে’, বললেন মোদি

নয়াদিল্লি: দুর্নীতিকে সাধারণ ব্যাপার হিসেবে দেখলে চলবে না। এতে দেশের বড় ক্ষতি হবে। তৃতীয় দফার লোকসভা ভোটের আগে নিউজ 18-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার ইডি এবং সিবিআই-এর মতো তদন্ত সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবেই নেটওয়ার্ক 18-এর গ্রুপ সম্পাদক রাহুল যোশীকে এ কথা বলেন মোদি। পাশাপাশি বিজেপিতে যোগ দেওয়া ২৫ বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে চলা মামলা স্থগিত হয়ে যায় বলে সংবাদপত্রের একটি রিপোর্টও খারিজ করে দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দুর্নীতির মামলাগুলো আদালত খতিয়ে দেখছে। এই ধরনের অভিযোগ স্বাধীন এবং সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধাচারণ বলে মনে করেন তিনি। মোদি বলেন, “কোনও মামলা বন্ধ হয়নি। আদালত যা রায় দেবে, তাই হবে। আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে এরকম কটা মামলা আছে? মাত্র ৩ শতাংশ। এমনকী বড় বড় আমলাদেরও জেল হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরনের সংস্থাগুলি গঠন করা হয়েছিল কেন? যদি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই সংস্থাগুলো তৈরি করা হয়, তাহলে তারা সেই কাজটা করবে না? আদালত সবার উপরে…তারাই সবটা পরীক্ষা করে দেখবে”।

আবগারি কেলেঙ্কারি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার বাড়িয়েছে ইন্ডিয়া জোট। আপ আহ্বায়কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রতিবাদে দিল্লির রামলীলা ময়দানে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি ‘গণতন্ত্র বাঁচাও সমাবেশ’-এর আয়োজন করেছিল।

শুরু থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছে বিজেপি। চলতি লোকসভা নির্বাচনেও এটা বড় ইস্যু। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলছেন, দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। এটাকে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে দেখলে চলবে না। তিনি বলেন, কেউ কেউ দুর্নীতিকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করছে, তাঁদের কড়া সমালোচনা হওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: ছাদে পুড়ছে জলের ট‍্যাঙ্ক, ট‍্যাপ খুললেই বেরোচ্ছে আগুনের মত গরম জল! ৪ সহজ টিপসেই হবে কনকনে ঠান্ডা

মোদির কথায়, “দুর্নীতিকে হালকাভাবে নেবেন না। এই নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত। একটা সময় দুর্নীতির অভিযোগও জনমানসে গভীর প্রভাব ফেলত। আজ দোষী সাব্যস্ত এবং শাস্তির পরেও অনেকে হাত নেড়ে ছবি তুলছে। তারা তো দুর্নীতিকে মহিমান্বিত করা চেষ্টা করছে। এর সমালোচনা হওয়া উচিত। দুর্নীতিকে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে দেখা চলবে না। নাহলে দেশের বড় ক্ষতি হবে। এটা বিজেপি বনাম অন্য দলগুলোর বিষয় নয়, দেশের বিষয়”।

প্রধানমন্ত্রীর মতে, দেশে এমন পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে যেন দুর্নীতি খুব স্বাভাবিক বিষয়। এতে আখেরে সাধারণ গরিব মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান বের করতে হবে। প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো, জিইএম পোর্টালের মতো কেন্দ্রের প্রযুক্তি চালিত উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মোদী বলেন, দুর্নীতি নির্মূল করতে হলে স্বচ্ছ সিস্টেম চালু করতে হবে।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন প্রাণীর ৭৫০ টি পা রয়েছে? ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন, আপনি জানেন কি?

মোদির কথায়, “আমি দেখছি ধীরে ধীরে একটা পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে, ‘ওহ, ঠিক আছে, এমন তো হয়ই’। কিন্তু গরিব মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, এটাই দেশের সংকল্প হওয়া উচিত। আমি পলিসি চালিত সিস্টেমে বিশ্বাস করি। প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। আগে এক প্রধানমন্ত্রী বলতেন, সরকার ১ টাকা দিলে জনগণের কাছে পৌঁছয় মাত্র ১৫ পয়সা। আজ আমি বলছি, ১ টাকা দিলে ১০০ পয়সাই জনগণের কাছে পৌঁছয় – এটাই ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার। কীভাবে? ব্যবস্থার উন্নতি করে! আমরা GeM পোর্টাল চালু করেছি। দুর্নীতি কমানোর লক্ষ্যে এটা বড় পদক্ষেপ”।

প্রধানমন্ত্রী আরও মনে করেন, সিস্টেমের উন্নতির জন্য এই ধরনের পদক্ষেপের পাশাপাশি সমাজে সচেতনতাও তৈরি করতে হবে, যাতে যে কোনও স্তরে দুর্নীতিকে মানুষ সহ্য না করে। মোদি বলেন, “দ্বিতীয়ত সমাজকে জাগিয়ে তুলতে হবে। সমাজকে সচেতন করতে হবে যাতে মানুষ দুর্নীতিকে প্রশ্য না দেয়। সেই পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতারা এসবে ভয় পায় না। কেউ না কেউ তাদের (দুর্নীতিগ্রস্তদের) সমর্থন করবে, কারণ তারা আমাদের বিরোধিতা করছে। এটা ঠিক নয়”।

2024-04-29T11:42:10Z dg43tfdfdgfd