লেবাননে এবার ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ, মৃত ২০, আহত ৪৫০

একদিন আগেই লেবাননে পেজারে বিস্ফোরণ হয়। মঙ্গলবার পেজার বিস্ফোরণের ফলে মারা গেছেন ১২ জন, আহত প্রায় তিন হাজার। আহতদের মধ্যে লেবাননে ইরানের রাষ্ট্রদূতও আছেন।

তার একদিন পরেই বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলিতে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ হলো। এই জায়গাগুলি হেজবোল্লার ঘাঁটি বলে পরিচিত। হেজবোল্লাকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র-সহ কিছু দেশ।

পেজার বিস্ফোরণে যে ১২ জন মারা গেছিলেন, তাদের শেষকৃত্যের সময় কিছু ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ হয় বলে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

হেজবোল্লা এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। তবে ইসরায়েল এই পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট উত্তরে মোতায়েন করা সেনা ডিভিশনকে বলেছেন, যুদ্ধ এখন একটা নতুন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যুদ্ধের ভরকেন্দ্র উত্তরের দিকে সরে যাচ্ছে। সেজন্য তারা উত্তরে বেশি করে সেনা মোতায়েন করছেন।

ইরান এবং লেবাননের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের লক্ষ্য যে হেজবোল্লা তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাদের দাবি, এর জন্য ইসরায়েলই দাযী।

মোবাইলে সহজেই লোকেশন ধরে ফেলা যায় বলে হেজবোল্লা সদস্যরা মোবাইল ব্যবহার করেন না। তারা পেজার, ওয়াকিটকি ব্যবহার করেন।

কিছু মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, ইসরায়েল গোল্ড অ্যাপলো পেজার্স-এর একটি শিপমেন্ট ধরে ফেলে। তারপর পেজারের মধ্যে বিস্ফোরক ভরে দেয়া হয়। সেই পেজার হোজবোল্লাকে সরবরাহ করা হয়। সেগুলিতেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

বিস্ফোরণের পিছনে ইসরায়েল?

শুধু হেজবোল্লা বা ইরান নয়, ইসরায়েলের অনেক মিডিয়াও বলছে, এই বিস্ফোরণের পিছনে ইসরায়েলই আছে। ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান সংবাদপত্র হারেটজ জানিয়েছে, পেজার ডিটোনেট করার সিদ্ধান্ত খুব তড়িঘড়ি করে নেয়া হয়েছে। আগে ঠিক ছিল, সংঘাত খুব বেড়ে গেলে তা করা হবে।

ওই সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, ''হেজবোল্লার মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার একটা ভাব তৈরি হবে। তাতে অদূর ভবিষ্যতে তার কম্যান্ড ও কন্ট্রোল সিস্টেমে আঘাত লাগবে।''

'উত্তেজনা বাড়বে'

ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ইনস্টিটিউট ফর রিজিওনাল ফরেন পলিসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর গিল মুরসিয়ানো বলেছেন, ''হেজবোল্লার সঙ্গে বিরোধ কূটনৈতিক পথে মেটার সম্ভাবনা না থাকায় এই অপারেশন করা হয়েছে। এটা ঠিক, পেজারে বিস্ফোরণ পরে করা হবে বলে ঠিক ছিল। তা আগে করা হয়েছে। বোঝা যাচ্ছে, ইসরায়েল বর্তমান পরিস্থিতিকে খোলাখুলি যুদ্ধপরিস্থিতি বলে মনে করছে।''

তিনি জানিয়েছেন, ''এর ফলে উত্তেজনা আরো বাড়বে। ইসরায়েল হেজবোল্লার লড়াই করার ক্ষমতায় যতটা সম্ভব আঘাত করতে চাইছে।''

বৈরুত ভিত্তিক সাংবাদিক রনি চাতাহ জানিয়েছেন, হেজবোল্লা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তার দিকেই নজর থাকবে। তবে তিনি মনে করেন, ''হেজবোল্লা খুব বড় আকারে প্রত্যাঘাত করতে যাবে না। তারা ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত করতে চাইবে।''

জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)

2024-09-19T03:27:21Z dg43tfdfdgfd