পুজোর সময় যাতে আমজনতাকে নাকাল হতে না হয়, তা নিশ্চিত করতেই আপাতত বাস ধর্মঘট স্থগিত রাখল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে, সংগঠনের সদস্যদের হুঁশিয়ারি, এরপরও যদি তাঁদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হয়, তাহলে আবারও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন তাঁরা।
রাজ্যের অন্য়ান্য প্রান্তের মতো দক্ষিণ দিনাজপুরের ব্যস্ত শহর বালুরঘাটেও টোটোর সংখ্যা বেড়েছে। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে টোটো চালকদের একাংশের দৌরাত্ম্য ও দাদাগিরি।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, টোটোর এই দৌরাত্ম্যেই অতীষ্ট বাস মালিক ও বাস চালকরা। অভিযোগ উঠেছে, বহু ক্ষেত্রেই টোটো চালকরা রুটের ধার ধারেন না। এমনকী, তাঁরা ট্রাফিক নিয়মও মানেন না।
এদিকে, অনিয়মিত এবং বেআইনিভাবে টোটো চালানোর ফলে একদিকে যেমন যানজট লেগেই থাকে, অন্যদিকে অন্য়ান্য যানের যাত্রীরা এইসব টোটো ব্যবহার করায় বাকিদের রোজগারেও টান পড়ে।
মূলত এইসব কারণেই ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বালুরঘাট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। স্থির করেছিলেন, বালুরঘাট থেকে সংশ্লিষ্ট রুটগুলিতে যাত্রীবাহী বাস পরিষেবা বন্ধ রাখবেন তাঁরা।
এই প্রেক্ষাপটে পুজোর মুখে বাস বন্ধ থাকলে আমজনতা যে বেজায় বিপাকে পড়বে, তা বিলক্ষণ বুঝেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। তাই, তড়িঘড়ি ধর্মঘটের ডাক দেওয়া সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।
শেষমেশ আলোচনার টেবিলেই বরফ গলে। জেলা প্রশাসনের তরফে বাস মালিকদের আশ্বাস দেওয়া হয়, তাঁদের সমস্ত দাবি ও অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। সেইসঙ্গে, সমস্যাগুলির সমাধান করতে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
এরপরই সোমবার রাতে বালুরঘাট বাস টার্মিনাসে সাংবাদিক বৈঠক করেন বালুরঘাট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সেখানেই আপাতত ধর্মঘট স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন তাঁরা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুজোর মরশুমে মানুষ সমস্যায় পড়ুক, সেটা তাঁরা কখনই চান না। তাই, আপাতত ধর্মঘট স্থগিত রাখা হচ্ছে। কিন্তু, তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না।
জেলা প্রশাসন বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাঁদের সব সমস্যার যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। বাস মালিকদের বক্তব্য, প্রশাসন যদি তাদের প্রতিশ্রুতি অনুসারে পদক্ষেপ না করে, তাহলে কালীপুজোর পরই তাঁরা ফের আন্দোলনে নামবেন। সেক্ষেত্রে আবারও ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে।
সোমবার রাতে ধর্মঘট স্থগিত রাখার কথা ঘোষিত হওয়ায় মঙ্গলবারই বালুরঘাট বাস টার্মিনাস থেকে বিভিন্ন পকেট রুটে স্বাভাবিকভাবে বাস চলাচল শুরু হয়ে যায়। এর ফলে একদিকে যেমন জেলা প্রশাসন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে, তেমনই স্বস্তি পান নিত্যযাত্রীরা।
2024-10-01T13:46:42Z dg43tfdfdgfd