COROMANDEL EXPRESS ACCIDENT : বোনের বিয়েতে আসা হল না! ওডিশার মর্গে মিলল মালদার যুবকের মুণ্ডুকাটা দেহ

ওডিশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাকে শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা বলছেন অনেকে। এই দুর্ঘটনায় এখনও অবধি ২৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার কারণ জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গেরও অনেকের নির্মম মৃত্যু হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন মালদার বাসিন্দা কৃষ্ণ রবিদাস।

ছ'দিন পর বোনের বিয়ে। রুটিরুজির টানে পাইপলাইনের কাজ করতে যেতে হয়েছিল চেন্নাই। শুক্রবারের করমণ্ডল এক্সপ্রেস দু্র্ঘটনার সময় পাশের লাইনে থাকা হামসফর এক্সপ্রেস চেপে বাড়ি ফিরছিলেন কৃষ্ণ। কিন্তু আর ফিরে আসা হল না। ২৩ বছর বয়সেই চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়তে হল কৃষ্ণকে।

কৃষ্ণর বাড়ি মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মালিওর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পিপুলতলা গ্রামে। কৃষ্ণরা চার ভাই, দুই বোন। কৃষ্ণ ছিলেন বাড়ির সবথেকে ছোটো ছেলে। বৃদ্ধ বাবা হেমন্ত রবিদাস ও মা যশোদা রবিদাস ওই বাড়িতেই থাকেন। ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেন তারা। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন মা যশোদা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও।

মৃত কৃষ্ণের মা বলেন, 'ট্রেন দুর্ঘটনার পর তিনদিন ধরে কৃষ্ণের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। সরকারি হেল্পলাইনে ফোন করেও কোন খোঁজ মিলছিল না। অবশেষে সোমবার সরকারি সূত্রে খবর পেয়ে কৃষ্ণর দাদা অশোক ওডিশাতে যায়। ভুবনেশ্বর মর্গে ভাইয়ের মুণ্ডহীন দেহ শনাক্ত করে।'

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জামা,প্যান্ট,বেল্ট এবং পকেটে থাকা আধার কার্ড দেখে ভাইকে চিনতে পারে দাদা অশোক। মৃত যুবকের বাবা হেমন্ত বলেন, 'আগামী ১২ জুন, আমার ছোটো মেয়ের বিয়ে রয়েছে। বোনের বিয়ের কারণেই কৃষ্ণ বাড়িতে ফিরছিল। কিন্তু, এই দুর্ঘটনা আমার ছেলেটার প্রাণ কেড়ে নিল।'

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুর্ঘটনার কবলে পড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের পাশের লাইনে থাকা হামসফর এক্সপ্রেসে জেনারেল কম্পার্টমেন্টের ছিলেন কৃষ্ণ। তিনি চেন্নাই থেকে হাওড়া ফিরছিলেন। ট্রেনে ওঠার আগে বাড়িতে ফোন করেছিলেন কৃষ্ণ। তারপর আর বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা হয়নি।

দুর্ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে ছিল কৃষ্ণের পরিবারের সদস্যরা। বারবার ফোন করেও বাড়ির কনিষ্ঠতম সদস্যের কোনও খোঁজ মিলছিল না। শেষে তিনদিন পর মৃতদেহ হদিশ পাওয়া যায়। আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে কৃষ্ণের দেহ গ্রামের বাড়িতে ফিরবে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছাতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মন্ত্রী তাজমুল হোসেন কৃষ্ণের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। সবরকমভাবে সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।

2023-06-06T05:32:52Z dg43tfdfdgfd