প্যালেস্তাইনের সমর্থক জর্ডন কেন ইরানি হামলা রুখতে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়াল?

ইজরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে জর্ডন। আশ্চর্যজনকভাবে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। ইরানের ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে জডর্ন সেনাও। কিন্তু কেন? গাজায় যখন ইজরায়েল হামলা চালায়, সেই সময় নেতানিয়াহু সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিল জর্ডন সরকার। এখন তারাই ইজরায়েলের হয়ে ইরানি ড্রোন প্রতিহত করছে!

আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জর্ডন জানিয়েছে, তারা আত্মরক্ষার জন্য ইরানি ড্রোন প্রতিহত করেছে। ইজরায়েলকে সাহায্য করার জন্য নয়। জডর্নের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ প্যালেস্তাইনকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু ইরানের মিত্র হামাসের সঙ্গে ইজরায়েলের যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেননি। এই ঘটনাকে ‘ভারসাম্যের খেলা’ হিসেবেই দেখছে আন্তর্জাতিক মহল।

জর্ডনের প্রতিবেশি রাষ্ট্র সিরিয়া এবং ইরাক। দুটি দেশই ইরানের প্রক্সি বাহিনী হিসেবে কাজ করে। যাই হোক, ইরানের ড্রোন হামলা রুখে দেওয়ার পর জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর একটা মিম সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ইজরায়েলের সামরিক পোশাক পরে চারদিকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

ইজরায়েল-জডর্ন সম্পর্ক: ১৯৯৪ সালে দুই দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তি সাক্ষর হয়। তার আগে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে ৪ বার ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় জর্ডন। সে দেশের জনসংখ্যার অধিকাংশই প্যালেস্তেনিয়ান। ১৯৯৭ সালে জডর্নের মাটিতে এক সিনিয়র হামাস কর্তাকে হত্যার চেষ্টা করে মোসাদ। ইজরায়েলি দূতাবাসে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে জর্ডনের এক নাগরিকের মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে ইজরায়েলের প্রতি জর্ডনের সাধারণ মানুষ বিরূপ মনোভাবই পোষণ করে।

ইজরায়েল-জর্ডন সম্পর্কে চারটি প্রধান ইস্যু:

প্যালেস্তাইন – হাশেমাইটরা (জর্ডনের রাজপরিবার) প্যালেস্তাইন ইস্যুকে অভ্যন্তরীণ সমস্যা মনে করে। তাঁদের মতে, দুই রাষ্ট্রকে এই সমস্যা মেটাতে হবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক নীতি জর্ডনের মনে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। আব্রাহাম অ্যাকর্ডের প্রতি তাঁরা শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু ইজরায়েল তা মানছে না বলে মনে করছে তারা।

জেরুজালেম – জেরুজালেমে মুসলিমদের পবিত্র স্থানগুলির প্রতি জর্ডনের আগ্রহ রয়েছে। হারাম আল শরিফ বা টেম্পল মাউন্টের উপর তাঁরা সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব চায়। রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর কাছেও এটা প্রধান সমস্যা।

অর্থনীতি – জর্ডন সিরিয়া এবং ইরাক থেকে ১.৫ মিলিয়ন শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। যা অর্থনীতি এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় বড়সড় হুমকি। ইতিমধ্যে তারা জল ও জ্বালানি ঘাটতির সঙ্গে যুঝছে। জর্ডনের দীর্ঘস্থায়ী জল সমস্যা ইজরায়েল-জর্ডন শান্তি চুক্তির মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। ইয়ারমুক নদীর জল বণ্টনে রাজি হয় দুই দেশ। কিন্তু জর্ডনে ২০২১ সালের এপ্রিলে খরার সময়, নেতানিয়াহু প্রাথমিকভাবে অতিরিক্ত জল সরবরাহ করতে অস্বীকার করেন।

আরও পড়ুনঃ T20 World Cup 2024: কে থাকল দলে আর কে পড়ল বাদ? টি২০ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে মহাচমক! জানুন বিস্তারিত

নিরাপত্তা – জর্ডন এবং ইজরায়েল, উগ্র ইসলামিক গোষ্ঠীগুলির হুমকির মুখে জর্জরিত উভয় দেশই। জর্ডন ইরানের বিরুদ্ধে স্বাধীনভাবে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না। দ্য জেরুজালেম স্ট্র্যাটেজিক ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সিরিয়ায় ইরানি উপস্থিতির সম্প্রসারণ হিসাবে জর্ডন সক্রিয়ভাবে তার মাটিতে ইরানের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করে। ইরাক এবং সিরিয়ার সঙ্গে সীমানা থাকায়, জর্ডন আইএসআইএসের থেকেও হুমকি পাচ্ছে।

2024-04-29T09:26:48Z dg43tfdfdgfd