SSC SCAM WEST BENGAL : চাকরি হারিয়ে থমথমে বাগদার মামাভাগ্নে গ্রাম

আশিস নন্দী, বাগদাবাগদা ব্লকের মামাভাগ্নে গ্রামের চন্দন বিশ্বাসের হাত ধরে শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন অনেকেই। অভিযোগ ছিল, টাকা নিয়ে শিক্ষকের চাকরি করে দিতেন চন্দন ওরফে ‘সৎ রঞ্জন’। কেউ গাছ, কেউ জমি, কেউ লোন নিয়ে চন্দনকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু সোমবারে হাইকোর্টের রায় বেরনোর পর থেকেই থমথমে গ্রাম।

জানা গিয়েছে, এই গ্রামের প্রায় ৩৫ জনের চাকরি গিয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য তালিকায় রয়েছেন তা জানা যায়নি। চাকরি হারিয়ে শিক্ষকরা একপ্রকার নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছেন। চাকরির টাকায় কেউ ঋণ নিয়ে বাড়ি কিনেছেন। কেউ আবার ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন।

কী ভাবে ঋণ শোধ হবে, কিংবা সংসার চলবে ভেবে কুল পাচ্ছেন না তাঁরা। চাকরি খুইয়ে কারও ফোন সুইচড অফ। কারও বাড়িতে আবার তালা ঝুলছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে এই গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তারের পরেই রাতারাতি মামাভাগ্নে গ্রামের নাম সংবাদ শিরোনামে চলে আসে। চন্দনকে টাকা দিয়ে ওই গ্রাম ও তার আশেপাশের চড়ুইগাছি, রামনগর, কুরুলিয়া গ্রামের অনেকেই স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন।

চাকরি পাওয়ার তালিকায় যোগ্যরা যেমন আছেন, তেমন এই চার গ্রামের অযোগ্যরাও রয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, একসময়ে মামাভাগ্নে গ্রামের চন্দন মণ্ডলের বাড়িতে প্রতিদিন চাকরিপ্রার্থীদের ভিড় লেগে থাকত। শাসকদলের অনেক বড় মাপের নেতার পাশাপাশি শিক্ষা দপ্তরের অনেক উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ছিল। চন্দনের বাড়িতে শাসকদলের নেতাদেরও প্রায় গাড়ি করে আসতে দেখা গিয়েছে।

কিন্তু সোমবার থেকে মামাভাগ্নে গ্রামের পরিবেশটা বদলে গিয়েছে। একসময়ে মাস্টার গ্রাম হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত এই গ্রাম-সহ আশেপাশের চার গ্রামের কমপক্ষে ৩৫ জনের চাকরি চলে যাওয়ার পর সীমান্ত লাগোয়া এই জনপদগুলো যেন থমথমে হয়ে গিয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষকুমার মণ্ডলের ভাইপো প্রণয়কুমার মণ্ডল পাঁচপোতা গ্রামের একটি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করতেন। তাঁর চাকরি চলে গিয়েছে।

সন্তোষ বলেন, ‘ভাইপো পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছে। কাউকে টাকা দিতে হয়নি। তা হলে আমার ভাইপোর চাকরি যাবে কেন?’ যদিও গ্রামের বাসিন্দাদের এক অংশের দাবি, বাগদা ব্লকের অধিকাংশ শিক্ষকই অযোগ্য। চন্দনের এক প্রতিবেশী হরণ বিশ্বাস বলেন, ‘গ্রামে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশ চন্দন মণ্ডলকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে। তবে সকলের নিয়োগ অবৈধ ভাবে হয়নি।’

কিন্তু যোগ্যতার নিরিখে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘চন্দন তৃণমূলের সময়কালে ফুলেফেঁপে উঠেছিল। তাঁকে যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের উচিত তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে গিয়ে ধর্না দেওয়া।’ বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘চন্দন মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’

এই ধরনের আরও খবর জানতে এই সময়ে আসুন। লেটেস্ট নিউজ, শহরের তাজা খবর, দেশের খবর, ব্যবসার খবর, খেলার আপডেট, দৈনিক রাশিফল এবং লাইফস্টাইলের টিপস জানুন। আর ভিডিয়োর জন্য রয়েছে TimesXP

2024-04-26T09:54:16Z dg43tfdfdgfd